মালদা, ৩০ মার্চ । হোলির রাতে এক গাড়িচালকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করলো পুলিশ। মৃতের পরিবারের দাবি, তারা তৃণমূল করে। আর পুরনো শত্রুতার কারণে এলাকার দুষ্কৃতীরা তাদের পরিবারের ছেলেকে খুন করেছে। যদিও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, পরকীয়া সম্পর্কের জেরে এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছে । সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার বাহান্ন বিঘা এলাকায়। মৃত ওই ব্যক্তির বাড়ি ইংরেজবাজারের বাগবাড়ি এলাকায়। বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ওই ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর অচৈতন্য অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে গভীর রাতে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর কথা জানিয়ে দেয়। পুরো বিষয়টি নিয়ে মৃতের পরিবার ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও এই ঘটনায় নির্দিষ্ট কারোর নামে অভিযোগ দায়ের হয় নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম রাজু শেখ (৩৫) । পেশায় ট্রাক্টর চালক ছিলেন তিনি। পরকীয়া সম্পর্কের জেরে মদের আসরে ধারালো হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে রাজু শেখকে বলে দাবি মৃতের পরিবারের।
মৃতের এক বোন রোজিনা খাতুন পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছেন, দাদার পরিবারে স্ত্রী নাবালক দুই ছেলে মেয়ে রয়েছে। সোমবার হোলির রাতে মোবাইল থেকে দাদা ফোন করে দাদা প্রাণেবাচার আর্তনাদ জানিয়েছিলেন । ওপ্রান্ত থেকে দাদা মোবাইলে বলেছিল তাকে নাকি খুন করে ফেলা হবে। এরপরই আমরা পাড়া-প্রতিবেশীদের কয়েকজনকে নিয়ে দাদার খোঁজ শুরু করি। পরে আবার ফোন করে জানতে পারি দাদা বাহান্ন বিঘা এলাকার একটি বাগানে পড়ে রয়েছে। এরপর পুলিশকে খবর দেয়। পরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখি দাদা রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। পরে পুলিশ এসে তাদের দেহ উদ্ধার করে মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানিয়ে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের শরীরে একাধিক জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথাতেও গুরুতর আঘাত রয়েছে। দুই হাত ভাঙা অবস্থায় ছিল। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে।
মৃতের এক প্রতিবেশি তথা স্থানীয় তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বাদল সেখ বলেন, ফোন মারফত জানতে পেরে সোমবার রাতে রাজু শেখের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা। দুই হাত ভাঙ্গা এবং মাথায় চোট ছিল তার। হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো হয়েছে। তবে কারা এর সাথে যুক্ত বা কি কারনেই বা খুন করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বুঝতে পারছেন না তারা। এই ঘটনায় ইংলিশ বাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে মৃত ব্যক্তি তৃণমূল দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।